কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায়

কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায়? এই তথ্যটি কি আপনি জানতে চান? তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন। আমাদের অনেকের জলাতঙ্ক রোগ থাকে কিন্তু কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায়? এ সম্পর্কে আমাদের তেমন কোন ধারণা থাকে না। এই আর্টিকেলে কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায়? সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায়? এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায়? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায়

কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায়ঃ ভূমিকা

জলাতঙ্ক রোগ সম্পর্কে আমরা অনেকেই অজানা। আমাদের মধ্যে অনেকেই মানুষের মুখে জলাতঙ্ক রোগ কথাটি শুনেছে। কিন্তু এই রোগ কেমন কোন ধরনের ক্ষতি হয় এ বিষয় সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। আজকের এই আর্টিকেলে কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায় অর্থাৎ জলাতঙ্ক রোগ নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে।

আরো পড়ুনঃ মুখে ব্রণের দাগ কিভাবে কমাবেন

এছাড়া আরো থাকবে জলাতঙ্ক রোগ কি? জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ, জলাতঙ্ক রোগ কেন হয়? জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায় কত দিনের মধ্যে এই বিষয়গুলো। যেহেতু আমরা অনেকেই জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত অথবা মনে হয় আমরা জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত তাহলে অবশ্যই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে নিবেন।

জলাতঙ্ক রোগ কি?

কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায়? বিষয়টি সম্পর্কে জানার আগে আমাদেরকে জলাতঙ্ক রোগ কি সে সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিতে হবে। জলাতঙ্ক হল ভাইরাসজনিত এক ধরনের রোগ যে রোগ একটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। রেবিজ ভাইরাস নামক এক ধরনের নিউরো ট্রপিক ভাইরাস দিয়ে এই রোগ হয়।

জলাতঙ্ক রোগ সাধারণত গৃহপালিত প্রাণী ও বন্যপ্রাণীদের প্রথমে সংক্রমিত করে। এরপরে মানুষ এই সংক্রমিত প্রাণী গুলো এবং এদের লালার সংস্পর্শে আসলে যদি এই প্রাণীগুলো মানুষকে কামড় দেয় অথবা আছড়ে দেয় তাহলে এই রোগ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পৃথিবীর সব জায়গাতেই প্রায় জলাতঙ্ক রোগ দেখা যায়।

জলাতঙ্ক রোগের কারণে প্রতিবছর বিশ্বের ২৪ থেকে ৬০ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। তাহলে আমরা জানতে পারলাম যে জলাতঙ্ক হলো একটি ভাইরাসজনিত রোগ। একটি তীব্র ভাইরাস সংক্রমণ এর কারণেই এই রোগ হয়ে থাকে। সাধারণত মাংসাশী প্রাণী যেমন কুকুর, বিড়াল, শেয়াল এদের দ্বারা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে।

জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ

সাধারণত বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী কামড়ের কারণে আমাদের জলাতঙ্ক রোগ হতে পারে। এটি একটি ভাইরাসনিত রোগ। বিশেষ করে কুকুর বিড়াল অথবা আরো গৃহপালিত যে সকল পশু রয়েছে সেগুলোর কামড়ে অথবা লালা থেকে জলাতঙ্ক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কুকুর, বিড়াল, বানর, বেজি ইত্যাদি প্রাণী এই রোগের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকে।

এই প্রাণীগুলো যদি আবার মানুষকে কামড় দেয় তাহলে সেই ভাইরাস মানুষের মধ্যে প্রবেশ করে যাই যার ফলে মানুষের জলাতঙ্ক রোগ হয়ে থাকে। সাধারণত এই রোগ এক প্রাণী থেকে অন্য প্রাণীতে ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগ নির্ণয় করার জন্য আমাদের জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জানা জরুরী।

জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

১। প্রথমদিকে অনির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ যেমন জ্বর খোদা মন্দা এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়।

২। যে স্থানে কামড় দিয়েছে সাধারণত সেই স্থানটি চিনচিন করা।

৩। জ্বর হওয়া জলাতঙ্ক রোগের অন্যতম একটি প্রধান কারণ।

আরো পড়ুনঃ কি কাজে ব্যবহার করা হয় গ্লিসারিন

৪। খিদে না লাগা। সাধারণত জলাতঙ্কের ভাইরাস আক্রমণ করলে খিদে কমে যেতে পারে।

৫। রোগীর হ্যালুসিয়েশন ও পাগলামি বেড়ে যেতে পারে।

৬। শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নারানোর অক্ষমতা এবং চেতনাশুন্য হয়ে যেতে পারে।

৭। কিছুদিন পর অনিয়ন্ত্রিত উত্তেজনা লালা রসের ক্ষরণ বৃদ্ধি হতে পারে।

সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে ঢোক গিলার সময় ডায়াফ্রাম, রেসপিরেটোরি মাসল ও কণ্ঠনালীর তীব্র ব্যথা যুক্ত সংকোচন হয় বিশেষ করে পানি পান করার চেষ্টা করলে ডায়াফ্রাম ও অন্যান্য মাশলের তীব্র সংকোচন ও ব্যথা হয়ে থাকে। যার ফলে রোগীর মধ্যে পানি ভীতি তৈরি হয়।

জলাতঙ্ক রোগ কেন হয়

আপনারা যারা উপরের আলোচনাগুলো পড়েছেন তারা ইতিমধ্যেই জলাতঙ্ক রোগ কেন হয়? এর কারণ সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন। মানুষের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ হয়ে থাকে প্রাণীর কামরের কারণে। প্রাণীর লালার মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগের ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। খামারের প্রাণী যেমন কুকুর, গরু, ঘোড়া ছাগল, এবং বন্যপ্রাণী আক্রান্ত হলে জলাতঙ্ক রোগ ছড়িয়ে পড়ে।

জলাতঙ্ক রোগ প্রথমে প্রাণীদের আক্রমণ করে এরপরে প্রাণীদের লালা অথবা তাদের কামোর থেকে মানুষের শরীরে সেই ভাইরাস প্রবেশ করে। মানুষ থেকে মানুষের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। যদি একটি উন্নত প্রাণী একজন ব্যক্তির উপর একটি খোলা ক্ষত চাটতে পারে তাহলে ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে।

বেশিরভাগ জলাতঙ্কর রোগ কুকুরের কামড়ের কারণে হয়ে থাকে। বিশেষ করে আমাদের দেশে ৯৫ শতাংশ জলাতঙ্ক রোগে হয়ে থাকে কুকুরের কামড়ের কারণে। এছাড়া আরো অন্যান্য প্রাণী যেমন বিড়াল, শেয়াল, বাদুর ইত্যাদি প্রাণীর জীবাণু দ্বারা জলাতঙ্ক রোগ ছড়াতে পারে মানুষের মাঝে। জলাতঙ্ক রোগ সাধারণত প্রাণীদের কামড়ে অথবা তাদের লালা থেকে হয়ে থাকে।

জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায় কতদিনের মধ্যে

যদি কেউ কুকুরের কামড় খেয়ে থাকে সাধারণত তারা কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায়? এ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাই। অবশ্যই আমাদের উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরী এবং সে অনুযায়ী আমাদেরকে চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে।

জলাতঙ্ক ভাইরাস বহনকারী কোন প্রাণী কর্তৃক কোন ব্যক্তি যদি সংক্রমিত হয়। তাহলে সংক্রমিত ব্যক্তির মধ্যে জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে ৩০ দিন থেকে ৫০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সংক্রমিত স্থান অর্থাৎ কামরের ওপর ভিত্তি করে কতদিনের মধ্যে এর রোগের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পাবে।

যদি জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত প্রাণী একজন সুস্থ ব্যক্তিকে কামড় দেয় তাহলে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে তার রোগের লক্ষণগুলো অর্থাৎ জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পেতে থাকে। তবে এই সময়সীমা বেশিও হতে পারে আবার কমও হতে পারে। ইতিমধ্যেই বলেছি এটা নির্ভর করে প্রাণী কতটা আঘাত করেছে তার ওপর।

কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায়ঃ উপসংহার

জলাতঙ্ক রোগ কি? কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায়? জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ, জলাতঙ্ক রোগ কেন হয়? জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায় কত দিনের মধ্যে এ বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত।

আরো পড়ুনঃ ফুসফুসে ক্যান্সারের রোগীদের কি কি খাবার দেওয়া উচিত

আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেল অবশ্যই সেই পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন এবং নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে থাকুন। ২০৮৭৬

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url