অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে কেন দেখা যায় ঘুমের সমস্যা

আপনারা কি অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে কেন দেখা যায় ঘুমের সমস্যা এবং অটিজম আক্রান্ত শিশুর প্রাথমিক নির্ণয় ও শনাক্ত করণ সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আমাদের আজকের এই অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে কেন দেখা যায় ঘুমের সমস্যা পোস্টটি আপনাদের জন্য। আজকে আমরা আলোচনা করব আপনার সন্তান অটিজমে আক্রান্ত কিনা কিভাবে বুঝবেন এবং অটিস্টিক শিশুর চেনার উপায় সম্পর্কে।
তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেই, অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে কেন দেখা যায় ঘুমের সমস্যা এবং অটিস্টিক শিশু চেনার ১০ টি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।

সূচিপত্রঃ অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে কেন দেখা যায় ঘুমের সমস্যা

অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে কেন দেখা যায় ঘুমের সমস্যা

অন্যান্য বাচ্চাদের তুলনায় অটিস্টিক শিশুদের বেশি ভালোবাসা ও যত্নের প্রয়োজন হয়। সাধারণত মৃগী রোগ, গ্যাসের সমস্যা, অ্যানজাইটি এবং ঘুমের সমস্যার মতো কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে দেখা দেয়। এর মধ্যে ঘুমের সমস্যা হচ্ছে অন্যতম। প্রথম থেকেই অটিজম শিশুদের মধ্যে এরকম কিছু সমস্যা থেকেই থাকে। যেটা নিয়ে মা-বাবারা অনেক চিন্তায় পড়েন। অটিজম শিশুরা অন্যান্য সাধারণ শিশুদের তুলনায় আচরণগত দিক দিয়ে আলাদা হয়ে থাকে। তবে তাদের থেকে অটিজম শিশুদের সমস্যা হচ্ছে ঘুমের।

আরো পড়ুনঃ ফুসফুসে ক্যান্সারের রোগীদের কি কি খাবার দেওয়া উচিত

এই ঘুমের সমস্যা অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে আবার সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন ও হয়ে থাকে। অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে কেন দেখা যায় ঘুমের সমস্যা, তা নিয়ে আজকে বিস্তারিত আলোচনা করব। অটিস্টিক বাচ্চাদের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে ঘুম। যার ভিতরে থাকতে পারে ঘুম না ধরা, বিছানায় প্রসব করে ফেলা, ঘুমের গুণমান খারাপ হওয়া কিংবা অস্থিরতা, দুঃস্বপ্নের কারনে ঘন ঘন জেগে ওঠা, নাক ডাকা, সামগ্রিক ঘুমের সময় কম এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ ঘুমের রুটিন।

এক্ষেত্রে অটিজমের জেনেটিক কারণগুলো সরাসরি শিশুর ঘুমিয়ে যাবার, ঘুমানো অবস্থায় এবং সতেজ হবার ক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। আবার বেশিরভাগ সময় অটিজমে আক্রান্ত বেশিরভাগ শিশুর বাইরের উদ্দীপনার প্রতি সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পাবার কারণে ও ঘুম যেতে সমস্যা হয়, যেমন শব্দ বা স্পর্শ। এগুলোর কারণে ঘুমটা সঠিকভাবে হয় না।

অটিজম আক্রান্ত শিশুর প্রাথমিক নির্ণয় ও শনাক্ত করণ

সাধারণত অটিজম একটা মানসিক বিকাশ জনিত সমস্যা কিংবা নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার যা শিশু জন্মগ্রহণের প্রথম তিন বছরের ভেতরেই পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। অটিজম আক্রান্ত শিশুর সাধারণত তিন ধরনের বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। প্রথমত অটিজম আক্রান্ত শিশুর সামাজিক যোগাযোগের সমস্যা থেকে থাকে। একটা শিশু স্বাভাবিকভাবেই জন্মের পরপরই অন্যের সাথে কিংবা পরিবেশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে, অটিজমে আক্রান্ত শিশুটির সেই জায়গাতে সমস্যা থাকে। আর একটা হচ্ছে interaction এ অর্থাৎ অন্যের সঙ্গে কথা বলা। এই যে যোগাযোগ, সেটাতেও সমস্যা হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ ফুসফুসে ইনফেকশন হলে করণীয় কি

এটা দুইভাবে হয়ে থাকে, কথা বলার মধ্যে দিয়ে ভাব প্রকাশ বা verbal communication ও nonverbal communication যেমন আকার ইঙ্গিত ইশারার মধ্য দিয়ে যোগাযোগ স্থাপন করা ও মাথা নাড়ানো চোখমুখে ও expression এর মধ্য দিয়ে একটা ইনফরমেশন দেয়া যায়, যোগাযোগ রাখা যায়। বিকাশ বা ডেভেলপমেন্টে তাদের দেরি থাকে একটু। আর একটা হচ্ছে একই কাজের প্রতি আগ্রহ থাকে এবং বারবার একই কাজ করতে পছন্দ করে। দেখা গেল কোন একটা বিষয়ের প্রতি যেমন সুতা, গাড়ির চাকা এরকম জিনিসগুলোর প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে। যাকে বলা হয়ে থাকে restricted and repetitive behaviours।

আপনার সন্তান অটিজমে আক্রান্ত কিনা কিভাবে বুঝবেন

প্রত্যেকটা মানুষ জন্মগতভাবেই সামাজিক যোগাযোগে অভ্যস্ত থাকে। জন্মের পর পরই শিশুর মায়ের চোখের দিকে তাকানো, মায়ের সাথে হাসির বিনিময় করা বা ফিরিয়ে দেওয়া, আরো বড় হলে অন্যদের সাথে সে যোগাযোগ করতে চাই। ছোট্ট শিশুটা আর একটা ছোট শিশুকে দেখলে তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে থাকে। এভাবেও সে তার পরিবেশের সঙ্গে অন্য পরিবেশের সংযোগ স্থাপন করার চেষ্টা করে। শিশুটি যখন আরেকটু বড় হয় তখন কোন বাসায় বেড়াতে গেলে অন্য বাচ্চাদের সাথে সেখানে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করে থাকে।

একাই খেলার চাইতে সবার সাথে মিলেমিশে খেলতে পছন্দ করে থাকে। কিন্তু অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের ছোটবেলা থেকে যে সামাজিক যোগাযোগ থাকে সেটাও মারাত্মকভাবে ব্যহত থাকে। দেখা যায় যে, চোখে চোখে তারা তাকায় না। তারা নিজেরাই একটা জগতের ভেতর থাকে। একটা ছোট শিশু হাত-পা নাড়াতে পারলে এদিক ওদিকে তাকিয়ে পুরো পরিবেশটা দেখার চেষ্টা করে। কিন্তু অটিজমের আক্রান্ত শিশুর বেলায় এটা সম্ভব হয় না।

আরো পড়ুনঃ কতদিনের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগ প্রকাশ পায়

অটিজমে আক্রান্ত শিশু নিজস্ব জগতে আত্মমগ্ন থাকে, মা-বাবা আদর করলে কোন প্রতিক্রিয়া পাইনা। সামাজিকভাবে বিকাশে বাচ্চারা ছয় মাস থেকে বাবলিং শুরু করে দেয়-দাদা, বু বু, মা এরকম ইত্যাদি শব্দ বলে থাকে। এটা হচ্ছে একটা red flag। যা দিয়ে ঠিকমতো বিকাশ হচ্ছে কিনা সেটা মা বাবা বুঝতে পারে। কিন্তু এ ধরনের ভাষার উন্নতি অটিস্টিক শিশুদের ক্ষেত্রে হয় না। এই লক্ষণগুলো দেখলেই বুঝে যাবেন আপনার সন্তান অটিজমে আক্রান্ত কিনা।

অটিস্টিক শিশুর চেনার উপায়| অটিস্টিক শিশু চেনার ১০ টি বৈশিষ্ট্য

অটিজমের বৈশিষ্ট্য নিয়েই মায়ের গর্ভ থেকে একটা শিশু জন্ম নিয়ে থাকে। অর্থাৎ অটিজম জন্মগত একটা ব্যাপার। তাই বাবা মা একটু খেয়াল করলেই অটিস্টিক শিশুর চেনার উপায় পেয়ে যাবে। তাই নিচে অটিস্টিক শিশু চেনার ১০ টি বৈশিষ্ট্য আলোচনা করা হলো।

  • অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা সমবয়সীদের সাথে থাকে না।
  • পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ করে থাকে।
  • কথা বলার সময়ই জড়তা থাকে।
  • চোখে চোখ রেখে কথা বলে না।
  • ধৈর্য কম থাকে।
  • সামাজিকীকরণ অনুপস্থিত থাকবে।
  • নাম ধরে ডাকার পরও সাড়া না দেয়া।
  • ভয় পেলে কিংবা খুশি হলেও মুখ দেখে বোঝা যায় না।
  • অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা কল্পনা করে খেলা করে না।
  • পরিবেশ অনুসারে মুখ ভঙ্গের পরিবর্তন না করা।

শেষ কথাঃ অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে কেন দেখা যায় ঘুমের সমস্যা

অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে কেন দেখা যায় ঘুমের সমস্যা এবং আপনার সন্তান অটিজমে আক্রান্ত কিনা কিভাবে বুঝবেন সে সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে কেন দেখা যায় ঘুমের সমস্যা সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।

আজ আর নয়, অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে কেন দেখা যায় ঘুমের সমস্যা সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই অটিস্টিক শিশুদের মধ্যে কেন দেখা যায় ঘুমের সমস্যা সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url