কখন গলগণ্ড রোগের সার্জারি করতে হয়

কখন গলগণ্ড রোগের সার্জারি করতে হয়? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর নিচে বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হবে। বিভিন্ন কারণবশত গলগণ্ড রোগের সার্জারি করার প্রয়োজন পড়তে পারে। যাই হোক, কখন গলগণ্ড রোগের সার্জারি করতে হয়? সেই বিষয় সম্পর্কে যদি আপনি বিস্তারিত তথ্য জানতে চান, তাহলে পড়তে থাকুন। আসুন দেখে নেয়া যাক, কখন গলগণ্ড রোগের সার্জারি করতে হয়?

পেজ সূচিপত্র: কখন গলগণ্ড রোগের সার্জারি করতে হয়

ভূমিকা 

সাধারণত গলগণ্ড রোগ তেমন ক্ষতিকর ও মারাত্মক কোন রোগ নয়। অধিকাংশ গলগণ্ড রোগ  শরীরের তেমন কোনো ক্ষতি সাধন করে না। তাই অল্পমাত্রায় যদি গলগণ্ড রোগ হয়। অর্থাৎ গলগণ্ডের আকার যদি অনেক ছোট থাকে সেক্ষেত্রে কোন চিকিৎসারাই প্রয়োজন পড়ে না। তবে যদি তা অনেক বড় হয়ে যায় এবং দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরা করতে সমস্যার সৃষ্টি করে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। 

সাধারণত যে সকল কারণে গলগণ্ড রোগের সার্জারি করার প্রয়োজন পড়ে সেই কারণগুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। তাই আপনি যদি প্রথম থেকে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়েন তাহলে আশা করি উপকৃত হতে পারবেন। আসুন জেনে নেয়া যাক, কখন গলগণ্ড রোগের সার্জারি করতে হয়? 

কখন গলগণ্ড রোগের সার্জারি করতে হয়

গলগণ্ড রোগের ক্ষেত্রে সাধারণত সার্জারির প্রয়োজন পড়ে না। তবে বিশেষ কিছু কারণে গলগণ্ড রোগের সার্জারি করার প্রয়োজন পড়তে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে গলগণ্ড রোগ কখনো কখনো বিড়ম্বনার সৃষ্টি করে। বিশেষ করে মেয়েদের গলায় যদি বড় ধরনের গলগণ্ড থাকে সেক্ষেত্রে তার তার সৌন্দর্য হানির কারণ হতে পারে। 
এছাড়াও অনেক সময় গলার গলগণ্ড এতটাই বড় হয়ে যায় যে তা স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে। এই অবস্থাগুলোতেই সাধারণত অপারেশন করা হয়ে থাকে। যাইহোক আসুন দেখে নেয়া যাক, কখন গলগণ্ড রোগের সার্জারি করতে হয়। 
  • থাইরয়েড গ্লান্ড অত্যধিক পরিমাণে বড় হয়ে গেলে: গলগণ্ড হলে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড বৃদ্ধি পায়। সামান্য মাত্রায় যদি থাইরয়েড গ্ল্যান্ড বৃদ্ধি পায় সেক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই। তবে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড যদি অত্যধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পায় এবং তা স্বাভাবিক জীবন যাপনকে ব্যাহত করে সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে গলগণ্ডের অপারেশন করাতে হবে। 
  • থাইরয়েড গ্লান্ড দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত করলে: গলার নিচে বৃদ্ধি প্রাপ্ত থাইরয়েড গ্ল্যান্ড যদি অতিরিক্ত বড় হয়ে যায় তাহলে দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত হতে পারে। তাই এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অপারেশন করে থাইরয়েড গ্রন্থি অপসারণ করা যেতে পারে। 
  • সৌন্দর্য হানির কারণে: গলার নিচে যদি থাইরয়েড গ্ল্যান্ড অতিরিক্ত পরিমাণে বড় হয়ে যায় তাহলে তা অবশ্যই সৌন্দর্য নষ্ট করবে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে তা বড় ধরনের একটি সমস্যা। তাই শরীরকে সঠিক শেপে নিয়ে আসতে অপারেশন করাতে পারেন। 
  • ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকলে: কিছু কিছু গলগণ্ড রোগ রয়েছে যেগুলো পরবর্তীতে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। এ ধরনের যদি কোন সম্ভাবনা থাকে তাহলে আপনি অপারেশন করে নিতে পারেন। এতে করে সম্ভাব্য ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে মুক্তি পাবেন। 

গলগণ্ড প্রতিরোধে কি করা উচিত

কথায় বলে "প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম"। যেকোনো রোগের ক্ষেত্রে যদি আপনি প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তাহলে অবশ্যই তার প্রতিকারের চেয়ে উত্তম। প্রতিরোধ হলো রোগ আপনার শরীরে আসতে না দেওয়া। আর প্রতিকার হলো রোগ শরীরে চলে আসার পরে তার চিকিৎসা করা। তো এখন আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন কোনটি উত্তম প্রতিরোধ নাকি প্রতিকার? নিঃসন্দেহে প্রতিরোধ। 

যাই হোক আর্টিকেলটির এই অংশে গলগণ্ড প্রতিরোধে কি করা উচিত? সেই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। তাই আপনি যদি গলগণ্ড রোগের প্রতিরোধে ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিম্ন বর্ণিত তথ্য গুলো মনোযোগের সাথে পড়তে হবে। কখন গলগণ্ড রোগের সার্জারি করতে হয়? সেই বিষয়ে সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে। 
  • আয়োডিনযুক্ত লবণ: আপনি যদি গলগণ্ড প্রতিরোধ করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে আয়োডিনযুক্ত লবণ খেতে হবে। কেননা আয়োডিনের অভাবেই গলগণ্ড রোগ হয়ে থাকে।আয়োডিনযুক্ত লবণ খেলে দৈনন্দিন আয়োডিনের চাহিদা পূরণ হয়। পক্ষান্তরে যদি আপনি আয়োডিনযুক্ত লবণ না খান তাহলে শরীর প্রয়োজনীয় আয়োডিনের যোগান পাবে না। এর ফলে পরবর্তীতে গলগণ্ড রোগ হতে পারে। 
  • আয়োডিনযুক্ত খাবার: আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়ার পাশাপাশি আয়োডিন সমৃদ্ধ খাবারও খেতে পারেন। এতে করে আপনি গলগণ্ড রোগ থেকে নিরাপদ থাকতে পারবেন। বিভিন্ন খাবার রয়েছে যেই খাবারগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়োডিন রয়েছে।
  • দই: দই গলগণ্ড প্রতিরোধে খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনি যদি নিয়মিত দই খান সেক্ষেত্রে কিন্তু গলগন্ড রোগ থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে পারবেন। তাই বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে নিয়মিত দই খান। 
  • সিম জাতীয় সবজি: সিম জাতীয় সবজিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়োডিন রয়েছে। তাই গলগণ্ড রোগ প্রতিরোধ করার জন্য ডাক্তার গণ সাধারণত সিম জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাই গোলগন্ড রোগ থেকে মুক্ত থাকতে চাইলে সিম জাতীয় সবজি খেতে পারেন। 
  • স্ট্রবেরি: স্ট্রবেরি গলগণ্ড রোগ প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই আপনি নিয়মিত স্ট্রবেরি খেতে পারেন। 

কিভাবে গলগণ্ড রোগ থেকে মুক্তি পাবেন

কখন গলগণ্ড রোগের সার্জারি করতে হয়, সেই বিষয়ে সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আর্টিকেলটির এই অংশে কিভাবে গলগণ্ড রোগ থেকে মুক্তি পাবেন সে বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হবে। তাই আপনি গলগণ্ড রোগ থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো মনোযোগের সাথে পড়তে হবে। 
  • আপেল সিডার ভিনেগার: এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগারের সাথে এক টেবিল চামচ মধু মিশ্রিত করে এক গ্লাস গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে খেলে অল্প সময়ের মধ্যেই গলগন্ড রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। 
  • নারিকেল তেল: গলগণ্ডের রোগের কারণে গলার নিচে যে স্ফীতি তৈরি হয় সেখানে নিয়মিত নারিকেল তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে আশা করা যায় ভালো ফলাফল পাবেন। 
  • হলুদ: হলুদ ভেষজ গুণসম্পন্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মসলা জাতীয় উদ্ভিদ। এই ওষুধটি গলগণ্ড সহ আরো বিভিন্ন রোগের কার্যকর ওষুধ হিসেবে যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তাই আপনি যদি গলগণ্ড রোগ থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে সামান্য গরম পানির সাথে হলুদের গুঁড়ো মিশ্রিত করে নিয়মিত সেবন করতে পারেন।
  • অশ্বগন্ধা: আশ্বগন্ধা প্রাকৃতিক ভেষজ জীবন সম্পন্ন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ উদ্ভিদ। আপনি যদি সামান্য গরম পানির সাথে অশ্বগন্ধার গুড়া মিশ্রিত করে সকাল সন্ধ্যা সেবন করেন তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন। 
  • আনারসের জুস: আনারসের জুসে থাকা পুষ্টিগুণ গলগণ্ড নিরাময় করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই নিয়মিত কিছুদিন আনারসের জুস খেতে পারেন। আপনি যদি নিয়মিত কিছুদিন আনারসের জুস খান তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই গলগন্ড রোগ থেকে মুক্তি পাবেন। 

শেষ কথা

কখন গলগণ্ড রোগের সার্জারি করতে হয়? আশা করি সে বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। কেননা এই আর্টিকেলটিতে গলগণ্ডের চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনার অনেক ভালো লেগেছে। যদি এই আর্টিকেলটি আপনার নিকটে ভালো লেগে থাকে তাহলে সকলের সাথে শেয়ার করবেন। ১৬৪১৩

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url