শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে

 শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে? সাধারণত এই বিষয়টি আমরা অনেকেই জানিনা। একজন পুরুষ হিসেবে আমাদের অবশ্যই শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে? এই বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিত। কারণ শুক্রাণু তৈরি হতে অনেকগুলো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। তাই আপনাদের জানানোর ক্ষেত্রে শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে? বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে? তা জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে

শুক্রাণু এর গঠন

শুক্রাণু দেখতে কেমন সাধারণত আমরা শুক্রাণু এর গঠন সম্পর্কে জানতে পারব। তবে বর্তমান বিজ্ঞানে শুক্রানু দেখতে কেমন? সাধারণত শুক্রাণু দেখেননি এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমরা যেহেতু শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে? এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি সেহেতু আমাদের অবশ্যই শুক্রাণু এর গঠন সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে।

আরো পড়ুনঃ হার্ট ভালো রাখার জন্য ৫টি খাবার

আপনি যদি শুক্রাণু ভালোভাবে লক্ষ্য করেন তাহলে এর দুইটি অংশ দেখতে পাবেন। সাধারণত স্তন্যপায়ী শুক্রাণুকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর প্রথমটি হলো মস্তক অথবা মাথা এবং দ্বিতীয়টি হল লেজ। তাহলে চলুন শুক্রাণু এর গঠনের দুইটি ভাগ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

মস্তক বা মাথা - শুক্রাণুর সম্মুখীন ভাগের উপরি ভাগকে অর্থাৎ গোলাকার অংশকে বলা হয় মাথা বা মস্তক। সাধারণত শুক্রাণু এর প্রধান অংশ হিসেবে এটি কাজ করে থাকে। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে জানা গিয়েছে যে শুক্রাণু এর মধ্যে রয়েছে অনেক বড় আকৃতির একটি নিউক্লিয়াস। এই নিউক্লিয়ার ডিম্বাণুর ভেতরে প্রবেশ করে এবং এর মাধ্যমে সন্তান জন্ম হয়।

লেজ - শুক্রাণুর নিচের দিকে যে অংশটুকু থাকে সাধারণত এটিকে লেজ বলা হয়। লেজের তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ নেই কিন্তু এই লেজ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ শুক্রাণুর জন্য। কারণ শুক্রাণুকে ডিম্বাণু পর্যন্ত নিয়ে যেতে সাহায্য করে এই লেজ। অর্থাৎ শুক্রাণুকে চলনে সহযোগিতা করে থাকে লেজ। তাই এটি হতে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ শুক্রাণুর।

শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে

আমরা জানি শুক্রাণু খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান কিন্তু আমাদের এই শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে? সাধারণত এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আমরা অনেকেই তেমন কোনো ধারণা রাখি না। ছেলেদের যৌনাঙ্গ থেকে যে যৌন রস বের হয় সাধারণত এটিকে বীর্য বলা হয় আর বীর্য শুক্রাণু কোষ নিয়ে গঠিত। এক ফোটা বীর্য এর মধ্যে অসংখ্য শুক্রাণু থাকে।

পৃথিবীতে যে সকল প্রাণী রয়েছে সাধারণত তাদের শুক্রাণু পুরুষদের অন্ডকোষ এর অভ্যন্তরীণে মিয়োসিস বিভাজনের মাধ্যমে তৈরি হয়ে থাকে। প্রাথমিক অবস্থায় স্পার্মাটোজাওন এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে ৭০ দিন এর বেশি সময় লাগতে পারে। এই প্রক্রিয়াটি বীজ কোষের পূর্বসূরীদের থেকে উৎপাদনের সাথে শুরু হয়ে থাকে।

সাধারণত এগুলো বিভাজিত হয়ে যায় এবং মিয়োসিসের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করে স্পার্মাটিড গঠন করে। সাধারণত সর্বপ্রথমে শুক্রাণুর পরিচিত লেজের বিকাশ ঘটে। পরবর্তীতে যখন এটি সম্পূর্ণ পূর্ণতাপ্রাপ্ত হতে যাবে তখন ৬০ দিন সময় লাগতে পারে। মানুষের দেহ থেকে যেই বীর্যগুলো বের হয় সাধারণত এগুলোর মধ্যেই শুক্রাণু কোষ থাকে।

স্পার্মাটোসাইট গুলো মিয়োসিসের এর মধ্যে প্রবেশ করে এরপর তাদের ক্রোমোসোমের সংখ্যা অর্ধেক কমে যায়। এরপরে সাধারণত এটি স্পার্মাটিড তৈরি করে। স্পার্মাটিড গুলো তখন পরিণত বয়স্ক হয় এরপরে এগুলো প্রাণীদের মধ্যে একটি লেজ বা ফ্ল্যাজেলাম তৈরি করে। সাধারণত এর মাধ্যমেই অবশেষে পরিণত চলনহীন শুক্রাণু কোষের গঠন সম্পন্ন হয়। এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে প্রায় তিন মাস সময় লাগে।

শুক্রাণু বৃদ্ধি করার উপায়

শরীরে বিভিন্ন উপায়ে শুক্রাণু তৈরি হয় এখন আপনি যদি এই উপায় গুলো অনুসরণ না করেন তাহলে আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে শুক্রানু থাকবে না। আমরা ইতিমধ্যেই শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে? এ বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি। তাহলে চলুন শুক্রাণু বৃদ্ধি করার উপায় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়ার ৮টি উপকারিতা

১। আপনার শরীরের ওজন যদি অতিরিক্ত হয়ে থাকে তাহলে আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ শুক্রাণু থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। তাই আপনাকে অবশ্যই শুক্রাণু বৃদ্ধি করার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে এবং আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

২। শরীরে শুক্রানু বৃদ্ধি করার জন্য অবশ্যই আমাদেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। যদি আমরা আমাদের খাদ্য তালিকায় নিয়মিত প্রশ্নকার খাবার রাখতে পারি তাহলে এগুলো আমাদের শুক্রানু বৃদ্ধিতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে।

৩। শুক্রানু বৃদ্ধি করার জন্য রসুন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এক্ষেত্রে আপনি যদি রসুন নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার শরীরে শুক্রানু বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া আরো বিভিন্ন ধরনের জটিল সমস্যা সমাধান করতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে রসুন।

৪। স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে সাধারণত আমরা বাইরের বিভিন্ন ধরনের খাবার এবং অতিরিক্ত তেল মশলা জাতীয় খাবার খেয়ে থাকি। এই খাবারগুলো খাওয়ার পরে আমাদের শুক্রানুর পরিমাণ অনেকটা কমে যায়। তা শুক্রাণু বাড়ানোর জন্য আমাদেরকে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।

শুক্রাণু কম হওয়ার কারণ কি

আমাদের অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে শুক্রাণু অনেক অল্প পরিমাণে বের হয়। সাধারণত আমরা বেশিরভাগ মানুষ শুক্রাণু কম হওয়ার কারণ কি এ বিষয়টি সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য জানিনা। শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে? এ বিষয়টি জানার সাথে সাথে আমাদেরকে অবশ্যই শুক্রাণু কম হওয়ার কারণ কি তা জেনে নিতে হবে। অনেকগুলো কারো নাই শুক্রাণু কম হয়ে থাকে।

১। যাদের ক্ষেত্রে গরমের প্রভাব বেশি সাধারণত তাদের স্বাভাবিকের চাইতে একটু কম শুক্রানু উৎপাদন হয়। বিশেষ করে যারা গরম পানিতে গোসল করে এবং দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকে সাধারণত তাদের ক্ষেত্রে শুক্রাণু কম তৈরি হয়।

২। এছাড়া শুক্রানু কম তৈরি হওয়ার আরো একটি অন্যতম প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত পরিমাণে ধূমপান এবং মদ্যপান করা। কেউ যদি অতিরিক্ত পরিমাণে ধূমপান করতে থাকে তাহলে তার শুক্রাণু এর পরিমাণ কমে যেতে থাকে।

৩। আবার অনেকের ক্ষেত্রে হরমোনের ভারসাম্য এর ওপরে অনেকটাই নির্ভর করে শুক্রাণু কি পরিমান তৈরি হবে এটি। যদি হরমোনের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অনেক সময় শুক্রাণু অতিরিক্ত কম তৈরির হয়ে থাকে।

৪। যারা অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার এবং ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে সাধারণত তাদের ক্ষেত্রে হরমোনের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় এবং শরীরের ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যায় যার ফলে তাদের শুক্রাণু অনেক কম তৈরি হয়।

আমাদের শেষ কথাঃ শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে শুক্রাণু এর গঠন, শুক্রাণু তৈরি হয় কিভাবে, শুক্রাণু বৃদ্ধি করার উপায়, শুক্রাণু কম হওয়ার কারণ কি? সাধারণত আমরা অনেকেই এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানিনা। তাই আমাদেরকে প্রথমে শুক্রানুর এ বিষয়গুলো জেনে নিতে হবে। কারণ শুক্রাণু হলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান সন্তান জন্মদানের জন্য।

আরো পড়ুনঃ প্রচন্ড শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ১০টি ঘরোয়া চিকিৎসা

এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট করতে থাকুন। কারণ আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত এই ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করে থাকি। ২০৭৯১

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url