৭০ হাজার বার কালেমা পড়ার ফজিলত
সূচিপত্রঃ ৭০ হাজার বার কালেমা পড়ার ফজিলত
- ৭০ হাজার বার কালেমা পড়ার ফজিলত
- লাখ কালেমা পড়ার নিয়ম
- খতমে তাহলীল পড়ার নিয়ম
- আম্বিয়া খতম পড়ার নিয়ম
- শেষ কথা
৭০ হাজার বার কালেমা পড়ার ফজিলত| মৃত ব্যক্তির জন্য তাসবিহ খতম
বিভিন্ন জায়গায় প্রচলিত আছে ও লোকমুখে শোনা যায় যে, মৃত ব্যক্তির জন্য তাসবিহ খতম বা ৭০ হাজার বার কালেমা পড়ার ফজিলত ও দোয়া করা। এই সব দ্বারা মনে করে যে, জাহান্নাম থেকে মৃত ব্যক্তি মুক্তি পাবে। তবে মৃত ব্যক্তির কবরের আজাব মাফ হবার জন্য তার জানাযার আগেই এভাবে ৭০ হাজার বার কালেমা বা তাসবিহ খতম করার রেওয়াজ বেশি রয়েছে। এই আমল সম্পর্কে যদিও কোন ধরনের প্রমাণ বা দলিল কেউ পায়নি। কেবলমাত্র লোকমুখে এই আমলটা প্রচলিত একটা কথা।
ইসলামী শরীয়তে যার কোন ভিত্তি নাই। এই বিষয়ে শাইখ ইবনে তাইমিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি কে জিজ্ঞেস করা হলে উত্তরে বলেন, ' এটা জয়ীফ (দুর্বল) বা সহিহ কোথাও বর্ণিত করা নেই'।(মাজমাউল ফাতাওয়া, ইবনে তাইমিয়াঃ ২৪/৩৩২)। তবে এটা সঠিক যে, কালেমা পড়ার ফজিলত অনেক বড় সওয়াবের কাজ এবং হাদিস অনুসারে এটাই হচ্ছে উত্তম জিকির। অসংখ্য হাদিসে কালেমা তাইয়্যেবা পড়ার অনেক ফজিলতের কথা বর্ণিত করা হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ কোন ভাইরাসের জন্য জন্ডিস রোগ হয়
একটা হাদিসে এ প্রসঙ্গে ইরশাদ করা হয়েছে, ' ইখলাসের সাথে যে ব্যক্তি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু পাঠ করবে সেই ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে'। (মুসনদে আহমাদঃ ১৯৬৮৯)। সেজন্য কালেমা তাইয়্যেবা নিজে পাঠ করা কিংবা কোন মৃত ব্যক্তির ঈসালে সওয়াবের জন্য পাঠ করলে সেটা ভালো কাজ। কিন্তু কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা পদ্ধতির কোন ধরনের প্রমাণ পাওয়া এখনো যায়নি। সে ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি বর্জনীয় করতে হবে।
ইসলামের নির্দেশনা হচ্ছে, মৃত ব্যক্তির মাগফিরাত কামনার জন্য দোয়া এবং বিভিন্ন নফল ইবাদাত যেমন তাসবিহ তাহলিল, দান সদকা, কোরআন তেলাওয়াত ইত্যাদি করে মৃত ব্যক্তির আমল নামায় সওয়াব পৌঁছানো একটা গুরুত্বপূর্ণ আমল। যা বহু দলিলের মাধ্যমে হাদীস শরীফে প্রমাণিত হয়েছে। এসব আমল হচ্ছে ব্যক্তিগত। কোন প্রকার আনুষ্ঠানিকতা ও দিন তারিখ ছাড়াই এ সকল আমলগুলো যখন ইচ্ছা তখন করা যায়।
লাখ কালেমা পড়ার নিয়ম| কালেমা খতমের নিয়ম
আমরা এখন লাখ কালেমা পড়ার নিয়ম বা কালেমা খতমের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। সুন্নাহর মাধ্যমে কালেমা খতমের বিষয়টা সাব্যস্ত করা হয়নি। কোন সওয়াব এর মাধ্যমে হবে না। এটা বেদআত হবার কারণে আমরা এর সওয়াব লাভ করতে পারবো না। এটা হচ্ছে এক ধরনের জিকির। যদি কেউ এই জিকির করতে চান তাহলে করতে পারবেন। তবে এটাকে গণনা করে পড়া, খতম করে পড়া কিংবা লোকজন ডেকে এনে খতম করিয়ে নেয়া, টাকা দিয়ে খতম করিয়ে নেয়া এই বিষয়গুলো মূলত সুন্নাহসম্মত না।
আরো পড়ুনঃ যে দুটি পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝবেন আপনার কিডনীর সমস্যা
এই জিনিসগুলো ইবাদতের মধ্যে আসে না। আমরা যদি নিজেরা ইবাদত আবিষ্কার করি, তাহলে আমাদের মূল ইবাদতগুলো হারিয়ে যাবে এবং নতুন এবাদত গুলো যোগ হয়ে যাবে। কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ এটা আল্লাহর কোন বান্দা যদি পড়ে তাহলে পড়তে পারবে। সেজন্য কোন সময়ের, ওযু করা কিংবা কতবার পড়বে এরকম নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নাই। নেই কোন ওয়াক্ত। স্বাভাবিকভাবে যে যত খুশি যখন খুশি পড়তে পারবেন। আল্লাহর বান্দাদের জন্য এটা একেবারেই উন্মুক্ত।
খতমে তাহলীল পড়ার নিয়ম| খতমে শিফা পড়ার নিয়ম
খতমে তাহলীল বলতে মূলত বোঝানো হয় লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ কে। পবিত্র কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ১ লক্ষ ২৫ হাজার বার পাঠ করাকে বলা হয় খতমে শিফা। খতমে তাহলীল ও একে বলা হয়ে থাকে। এখন কথা হচ্ছে খতমে তাহলীল কিভাবে পড়বেন? উপরের যেকোনো উদ্দেশ্যে কেউ যদি খতমে তাহলীল পড়ার জন্য মনোনিবেশ করে, সেক্ষেত্রে তাকে মোট এক লাখ পঁচিশ হাজার বার পড়তে হবে খতমে তাহলীল।
সে ক্ষেত্রে সে তার ইচ্ছা অনুযায়ী আলাদা করে নিজে নিজে এক লাখ ২৫ হাজার বার পড়তে পারে। আবার একই সঙ্গে কয়েকজনকে সাথে নিয়ে ও পড়তে পারবে। সংখ্যাটা নির্দিষ্ট ভাবে ঠিক রাখার জন্য সে কোন ইলেকট্রিক ডিভাইস বা চাল গণনা করে রাখতে পারবে। মূলত খতমে তাহলীল ১ লাখ ২৫ হাজার বার পড়ার পরে সবাই মিলে মোনাজাত করবে এবং মনের সকল বাসনা ও উদ্দেশ্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে আর্জি করবে। এটাই হচ্ছে মূলত খতমে তাহলীল পড়ার নিয়ম।
আম্বিয়া খতম পড়ার নিয়ম
এখন আমরা আম্বিয়া খতম পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানব। খতমে আম্বিয়া পড়ার নিয়ম
হচ্ছে-
-
এক লক্ষ পঁচিশ হাজার বার যেহেতু পড়তে হবে, তাই কারো পক্ষেই একা পড়া সম্ভব না।
সেজন্য খতমে আম্বিয়া পড়ার জন্য আপনার সঙ্গে বেশ কয়েকজন মানুষ কে সাথে নিতে
পারেন। এতে করে আপনার পক্ষে উক্ত কালেমা টা সম্পন্ন করা খুব সহজ হবে।
- অবশ্যই একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন যে, যখন মানুষ সাথে নিবেন তখন সবসময়ই চেষ্টা করবেন যেন ওই মানুষ গুলো হয় মুত্তাকীন ব্যক্তি।
- তারপরে একটা পবিত্র চাদর বা বিছানায় বসে আপনারা একসাথে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু দোয়াটি ১ লাখ ২৫ হাজার বার পড়বেন।
- পড়ার সংখ্যাটা ঠিক রাখতে ফলের বিচি কিংবা পবিত্র কোন কিছু আপনারা রাখতে পারেন। এতে করে কোন প্রকার ভুল হবার সম্ভাবনা গণনার মধ্যে থাকবে না।
- দোয়াটি পড়া শেষ হলে সকলেই সম্মিলিতভাবে মোনাজাত করে দোয়া করে নিবেন।
শেষ কথাঃ ৭০ হাজার বার কালেমা পড়ার ফজিলত
৭০ হাজার বার কালেমা পড়ার ফজিলত কালেমা খতমের নিয়ম লাখ কালেমা পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোষ্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। ৭০ হাজার বার কালেমা পড়ার ফজিলত সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।
আজ আর নয়, ৭০ হাজার বার কালেমা পড়ার ফজিলত সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই ৭০ হাজার বার কালেমা পড়ার ফজিলত সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url